Connect with us

Lifestyle

জাপানি মানুষের দীর্ঘজীবন রহস্য

Published

on

জাপানি মানুষের দীর্ঘজীবন রহস্য

জাপানি মানুষের দীর্ঘজীবন রহস্য: দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপনের অজানা গুণাবলী

জাপানি মানুষের দীর্ঘজীবন  রহস্য জানার চেষ্টা করি। আজকের পৃথিবীতে, অনেকেই দীর্ঘ জীবন ও সুস্থভাবে বাঁচতে চান। এমন একটি দেশ, যা দীর্ঘজীবনের জন্য সুপরিচিত, তা হল জাপান। বিশেষ করে, জাপানের ওকিনাওয়া দ্বীপের মানুষদের দীর্ঘ ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার জন্য পরিচিত। তাদের এই অদ্ভুত রহস্যের পিছনে কিছু বিশেষ গুণ এবং অভ্যাস রয়েছে, যা আমাদের জন্য অনুপ্রেরণা হতে পারে।

১. স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস

জাপানি খাবার সাধারণত কম ক্যালোরি, পুষ্টিকর এবং শাকসবজি ও মাছ সমৃদ্ধ। তাদের দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় ডিম, মাছ, শাকসবজি, ফল, আলু এবং চাল রয়েছে। বিশেষভাবে, মি-সো স্যুপ, সুশি এবং সয়া প্রোটিন তাদের রোজনামচায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এছাড়াও, অল্প পরিমাণে খাবার খাওয়ার অভ্যাস (যেমন হ্যারাহাচি-বু) তাদের জীবনে অনেক প্রভাব ফেলেছে। এই অভ্যাসটি হল, তারা খাওয়ার সময় তৃপ্তির চেয়ে ৮০% পরিমাণ খাবার খেয়ে থেমে যান, যা শরীরের জন্য অত্যন্ত স্বাস্থ্যকর।

২. দৈনন্দিন শারীরিক কার্যক্রম

জাপানি মানুষের জীবনযাপনে শারীরিক কার্যক্রম একটি অপরিহার্য অংশ। তারা দিনে অন্তত ৩০ মিনিট হালকা ব্যায়াম করেন। এটি তাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। বিশেষত, জাপানিরা হাঁটার ক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগী। এছাড়া, ইয়োগা বা জিমন্যাস্টিক্সের মতো কার্যক্রমও বেশ জনপ্রিয়।

৩. সামাজিক সংযোগ ও পরিবারিক বন্ধন

জাপানে সামাজিক সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করা হয়। পরিবার এবং বন্ধুদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক বজায় রাখা তাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ। পরিবারিক বন্ধন এবং সঙ্গীদের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক, মানসিক শান্তি ও সুখ নিশ্চিত করে, যা জীবনের স্থিতিশীলতা এবং সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে।

৪. মানসিক সুস্থতা এবং স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

জাপানিরা স্ট্রেস মোকাবেলা করার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করেন। তাদের মধ্যে মেডিটেশন, দর্শনীয় স্থানে ভ্রমণ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সঙ্গে সংযুক্ত থাকার প্রচলন রয়েছে। এই ধরনের শিথিলকরণ পদ্ধতিগুলি তাদের মানসিক শান্তি বজায় রাখতে সাহায্য করে, যা তাদের শারীরিক সুস্থতাকেও সহায়তা করে।

৫. প্রকৃতির সাথে সংযোগ

জাপানিরা প্রকৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা রাখেন। তারা মাঝে মাঝে পাহাড়ে হাইকিং করতে যান, বা সমুদ্রের তীরে সময় কাটান। প্রকৃতির সাথে সংযোগ তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যকে সমর্থন করে। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রকৃতির মধ্যে সময় কাটালে মানুষের শরীরে স্ট্রেস কমে এবং মানসিক চাপও হ্রাস পায়।

৬. জীবনের প্রতি ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি

জাপানি সংস্কৃতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো ইতিবাচক চিন্তা এবং জীবনের প্রতি ধৈর্যশীল দৃষ্টিভঙ্গি। তারা জীবনের প্রতিটি পরিস্থিতিকে একটি নতুন শিক্ষা হিসেবে দেখেন এবং কঠিন মুহূর্তগুলোও শান্ত মনোভাব নিয়ে মোকাবেলা করেন। এই ইতিবাচক মনোভাব তাদের শারীরিক ও মানসিক সুস্থতায় অনেক সাহায্য করে।

৭. নিয়মিত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য পরামর্শ

জাপানে স্বাস্থ্যসেবা অত্যন্ত উন্নত এবং প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থা সহজলভ্য। নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের জন্য পরামর্শ নেওয়া জাপানির মধ্যে একটি প্রচলিত অভ্যাস। তাদের জীবনের প্রতিটি দিকেই স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতনতা এবং সতর্কতা রয়েছে।

উপসংহার

জাপানি দীর্ঘজীবন রহস্যের মূল কারণ হলো তাদের স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সামাজিক সম্পর্ক, মানসিক সুস্থতা, প্রকৃতির সাথে সংযোগ এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি। আমাদেরও যদি এভাবে জীবনের প্রতিটি দিককে ভালোভাবে সাজানোর চেষ্টা করি, তাহলে আমরাও দীর্ঘ ও সুস্থ জীবনযাপন করতে পারব।

Continue Reading

Lifestyle

কি খেলে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে

Published

on

By

কি খেলে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে

কি খেলে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে

কি খেলে ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়বে :ইমিউনিটি পাওয়ার বাড়ানোর জন্য আমাদের খাদ্যাভ্যাসে কিছু পরিবর্তন আনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ইমিউন সিস্টেম বা রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা বিভিন্ন ধরনের ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং অন্যান্য রোগজীবাণু থেকে আমাদের রক্ষা করে। তাই আমাদের খাদ্যাভ্যাস এমনভাবে হতে হবে যাতে শরীরের ইমিউন সিস্টেম সুস্থ এবং শক্তিশালী থাকে।

এখানে কিছু খাবারের কথা বলা হচ্ছে, যেগুলি ইমিউনিটি বাড়াতে সহায়ক হতে পারে:

১. সবুজ শাক-সবজি

সবুজ শাক-সবজি যেমন পালং শাক, সরষে শাক, ব্রকলি ইত্যাদি ভিটামিন এবং মিনারেলের ভালো উৎস। এগুলো আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে ভিটামিন C এবং ভিটামিন A-এর উপস্থিতি ইমিউনিটি বৃদ্ধিতে সহায়তা করে।

২. লেবু ও ভিটামিন C সমৃদ্ধ খাবার

লেবু, কমলা, আমলা, স্ট্রবেরি ইত্যাদি খাবারে প্রচুর ভিটামিন C থাকে। এটি শরীরের কোষের পুনর্গঠন এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক।

৩. মধু

মধু একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক এবং এটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। মধুতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা শরীরকে নানা ধরনের ইনফেকশন থেকে রক্ষা করে।

৪. তুলসি পাতা

তুলসি পাতা প্রাকৃতিকভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে। এটি অ্যান্টিভাইরাল, অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট হিসেবে কাজ করে। তুলসি চা খাওয়ার মাধ্যমে ইমিউনিটি বাড়ানো যেতে পারে।

৫. মশুর ডাল এবং সয়াবিন

এই ধরনের প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা উন্নত করতে গুরুত্বপূর্ণ। মশুর ডাল এবং সয়াবিন ভিটামিন B6, আয়রন এবং জিংক সমৃদ্ধ, যা ইমিউন সিস্টেমকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।

৬. আখরোট এবং বাদাম

আখরোট, ম্যান্ডল, কাজু, পেস্তা প্রভৃতি বাদামে রয়েছে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট এবং অপরিহার্য চর্বি, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

৭. দই (যৌগিক প্রোবায়োটিকস)

দই বা ইয়োগার্ট শরীরের ভালো ব্যাকটেরিয়া বা প্রোবায়োটিকসের জন্য উপকারী। এটি পাচনতন্ত্রকে সঠিকভাবে কাজ করতে সাহায্য করে, যা আমাদের ইমিউন সিস্টেমকে ভালো রাখে।

৮. রসুন

রসুন একটি প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক হিসেবে কাজ করে এবং এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। রসুনে রয়েছে সালফার যৌগ, যা শরীরের সেলুলার ডিফেন্স সিস্টেমকে শক্তিশালী করে।

৯. মাছ এবং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড

মাছ বিশেষ করে স্যামন, ম্যাকারেল, টুনা এবং হেরিং ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিডের ভালো উৎস। এটি প্রদাহ কমাতে এবং শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে।

১০. পানি

শরীরকে হাইড্রেটেড রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যাপ্ত পানি পান করলে শরীরের সকল অঙ্গ এবং সিস্টেম ভালোভাবে কাজ করে, যা ইমিউন সিস্টেমের কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করে।

উপসংহার:

একটি সুস্থ ও শক্তিশালী ইমিউন সিস্টেম গড়ে তোলার জন্য শুধুমাত্র খাদ্যাভ্যাস নয়, পর্যাপ্ত ঘুম, স্ট্রেস কমানো এবং নিয়মিত ব্যায়ামও গুরুত্বপূর্ণ। সঠিক পুষ্টি গ্রহণের মাধ্যমে আপনি আপনার ইমিউনিটি ক্ষমতাকে উন্নত করতে পারেন এবং শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে পারেন।

Continue Reading

Lifestyle

রোজা রেখেও শরীর দুর্বল হবে না

Published

on

By

রোজা রেখেও শরীর দুর্বল হবে না

রোজা রেখেও শরীর দুর্বল হবে না যেসব খাবার খেলে

রোজা রেখেও শরীর দুর্বল হবে না : রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলিমদের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। এই সময়ে দীর্ঘ সময় ধরে পানি ও খাবার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হয়, যা অনেক সময় শরীরের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে। তবে সঠিক খাদ্যাভ্যাস অনুসরণ করলে রোজা রেখে শরীরের শক্তি ও স্বাস্থ্য বজায় রাখা সম্ভব। রোজার সময় শরীরের দুর্বলতা প্রতিরোধে বিশেষ কিছু খাবার খুবই কার্যকরী।

এখানে রোজা রাখার সময় শরীর দুর্বল না হওয়ার জন্য কিছু উপকারী খাবারের কথা আলোচনা করা হলো:

১. প্রচুর পানি ও তরল খাবার

রোজা রাখার সময় শরীর থেকে প্রচুর পরিমাণে পানি বের হয়ে যায়। তাই ইফতার ও সেহরিতে পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই জরুরি। পানি শরীরের হাইড্রেশন বজায় রাখতে সাহায্য করে এবং শরীরকে সুস্থ রাখতে সহায়ক। এর পাশাপাশি, ফলের রস বা স্যুপও পান করা যেতে পারে। কিন্তু মিষ্টি পানীয় থেকে বিরত থাকতে হবে, কারণ এতে চিনি বেশি থাকে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর।

২. দানা জাতীয় খাবার (গ্রেইনস)

সেহরি ও ইফতারে দানাশস্য যেমন—চিঁড়া, ওটস, আটা, গম, বাদাম ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে দীর্ঘ সময় ধরে শক্তি পাওয়া যায়। এ ধরনের খাবারে শর্করা ও ফাইবার থাকে, যা ধীরে ধীরে হজম হয় এবং শরীরকে দীর্ঘ সময় শক্তি দেয়। পাশাপাশি, এতে পুষ্টিগুণও প্রচুর থাকে।

৩. সবজি ও ফলমূল

সবজি ও ফলমূল রোজা রাখার সময় অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। সবজি ও ফলগুলো ভিটামিন, খনিজ উপাদান এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে সমৃদ্ধ, যা শরীরের সঠিক কার্যকারিতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেহরিতে সালাদ, ফলমূল যেমন—আপেল, কলা, আঙ্গুর, পেয়ারা, আমলা ইত্যাদি খেলে শরীর সতেজ থাকে। এসব খাবারে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরের জলীয় পরিমাণ বজায় রাখে।

৪. প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার

প্রোটিন শরীরের শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সেহরিতে ডিম, মুরগির মাংস, মাছ, ডাল, ছোলা, বুট, পনির ইত্যাদি খাবার খাওয়া উচিত। এই খাবারগুলি শরীরের পেশী গঠন এবং শক্তির জন্য অত্যন্ত উপকারী। এতে পরিপূর্ণ প্রোটিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন B12 থাকে।

৫. ফ্যাট (চর্বি) সমৃদ্ধ খাবার

ফ্যাট শরীরের শক্তির জন্য গুরুত্বপূর্ণ হলেও, রোজায় চর্বি জাতীয় খাবার খুব বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয়। তবে, কিছু স্বাস্থ্যকর চর্বি যেমন—অলিভ অয়েল, আখরোট, আমন্ড, পেস্তা ইত্যাদি খাওয়ার মাধ্যমে শরীরের প্রয়োজনীয় চর্বি মেটানো যেতে পারে। এগুলো শক্তির উৎস এবং ত্বক ও হজম ব্যবস্থার জন্যও উপকারী।

৬. ইফতারে পুষ্টিকর খাবার

ইফতারে হালকা এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। অতিরিক্ত তেল ও মশলাদার খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। মিষ্টি খাবারের পরিবর্তে খেজুর, ফল, বেসন অথবা হালকা স্যুপ খাওয়া ভাল। খেজুরে প্রাকৃতিক সুগার থাকে, যা শরীরে দ্রুত শক্তি প্রদান করে।

৭. যথাযথ বিশ্রাম ও স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট

শুধুমাত্র সঠিক খাবার নয়, পর্যাপ্ত বিশ্রামও শরীরের শক্তি বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ। রোজা রাখার সময় অনেকেই পর্যাপ্ত ঘুম পায় না, যা শরীরের দুর্বলতা বাড়ায়। তাই রোজার সময়ে সঠিক পরিমাণে ঘুমানো এবং মানসিক চাপ কমানো প্রয়োজন।

৮. মিষ্টি খাবার (অল্প পরিমাণে)

ইফতারে মিষ্টি খাবার খাওয়া অস্বাভাবিক নয়, তবে অতিরিক্ত মিষ্টি খাবার খাওয়ার ফলে শরীরের ইনসুলিন লেভেল দ্রুত বাড়তে পারে, যা পরবর্তীতে শরীরের দুর্বলতা সৃষ্টি করতে পারে। তাই পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি খাবার যেমন—কলা, তরমুজ, খেজুর ইত্যাদি খাওয়া ভাল।

উপসংহার:

রমজান মাসে রোজা রাখার সময় শরীরের শক্তি ও স্বাস্থ্য বজায় রাখতে সঠিক খাদ্যাভ্যাস ও পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এছাড়া, শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান, প্রোটিন, ভিটামিন, এবং খনিজ গ্রহণের মাধ্যমে রোজা রাখা আরো সহজ এবং সুস্থকর হবে। এই কিছু খাদ্য গ্রহণের মাধ্যমে আপনি রোজা রাখলেও শরীর দুর্বল হতে দেবে না।

শরীরকে সুস্থ রাখতে প্রতিদিনের খাদ্যাভ্যাসে ব্যালান্স বজায় রাখা এবং পুষ্টিকর খাবারের প্রতি মনোযোগী হওয়া জরুরি।

Continue Reading

Lifestyle

যা সেহেরিতে খেলে পিপাসা কম লাগবে

Published

on

By

যা সেহেরিতে খেলে পিপাসা কম লাগবে

যা সেহেরিতে খেলে পিপাসা কম লাগবে:

যা সেহেরিতে খেলে পিপাসা কম লাগবে: রমজান মাসে সেহেরি একটি গুরুত্বপূর্ণ খাবার, যা সারা দিনের রোজার জন্য শক্তি ও পুষ্টি যোগায়। তবে, অনেকেই সেহেরির পর সারাদিন পিপাসায় ভোগেন। তাই সেহেরিতে এমন কিছু খাবার নির্বাচন করা উচিত, যা শরীরকে পরিপূর্ণ রাখবে এবং পিপাসা কমাতে সহায়ক হবে। নিচে এমন কিছু খাবারের কথা বলা হলো, যা সেহেরিতে খেলে সারাদিন পিপাসা কম লাগবে।

১. দুধ ও দই

দুধ এবং দই উভয়ই শরীরে প্রোটিন এবং ক্যালসিয়ামের ভালো উৎস। এগুলিতে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। সেহেরিতে দুধ বা দই খেলে পিপাসা অনেকটাই কমে যায়। বিশেষ করে দই খেলে শরীরের পানির ভারসাম্য বজায় থাকে।

২. পানি ও খেজুর

সেহেরিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা খুবই জরুরি। তবে শুধুমাত্র পানি খাওয়াই যথেষ্ট নয়, খেজুর খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ। খেজুরে রয়েছে প্রাকৃতিক শর্করা, যা শরীরের শক্তির স্তরকে বজায় রাখতে সাহায্য করে। সেহেরির শুরুতে এক বা দুইটি খেজুর খাওয়া উপকারী।

৩. শাকসবজি ও সালাদ

শাকসবজি এবং সালাদে প্রচুর পানি থাকে, যা শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে সাহায্য করে। টমেটো, শসা, শালগম, পালং শাক, গাজর ইত্যাদি শাকসবজি সেহেরিতে খাওয়া যেতে পারে। এগুলো শুধু পানি সরবরাহ করে না, বরং শরীরে ভিটামিন ও খনিজ উপাদানও যোগায়।

৪. ওটস ও শসা

ওটস একটি ফাইবারসমৃদ্ধ খাবার, যা দীর্ঘসময় পেট ভরা রাখে এবং শরীরে পানি শোষণ করে। ওটসের সাথে শসা মিশিয়ে খেতে পারেন, যাতে শরীরের পানি সরবরাহ বাড়ে এবং পিপাসা কম লাগে।

৫. মুন্সি (ছোলা) ও বাদাম

মুন্সি বা ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর খাবার। এটি প্রোটিন এবং ফাইবারে সমৃদ্ধ। সারাদিনের জন্য শক্তি এবং দীর্ঘস্থায়ী তৃপ্তি বজায় রাখতে এটি কার্যকর। এছাড়া, বাদামও একটি ভালো উৎস শক্তির জন্য এবং পিপাসা কমাতে সহায়ক।

৬. ফলমূল

ফলমূল যেমন, তরমুজ, পেঁপে, আনারস, আপেল ইত্যাদি শরীরে পানি সরবরাহ করে এবং দীর্ঘসময় তৃপ্তি বজায় রাখে। বিশেষ করে তরমুজে প্রায় ৯২% পানি থাকে, যা পিপাসা কমাতে সাহায্য করে। সেহেরিতে এক পিস তরমুজ খেলে সারাদিন পিপাসা অনুভূত হবে না।

৭. সিদ্ধ ডিম

সিদ্ধ ডিম প্রোটিনে ভরপুর, যা সারাদিনের জন্য শক্তি প্রদান করে। এটি খেলে দ্রুত পিপাসা অনুভূত হয় না, এবং খিদেও কম লাগে। সেহেরিতে একটি সিদ্ধ ডিম খাওয়া উপকারী।

৮. সুজি খিচুরি

সুজি খিচুরি পেট ভরার পাশাপাশি শরীরকে শক্তি সরবরাহ করে এবং দীর্ঘসময় তৃপ্তি বজায় রাখে। এতে তেল ও মসলার পরিমাণ কম থাকলে পিপাসা কম হয়।

৯. হালকা তরকারি ও ভাত

সেহেরিতে হালকা তরকারি এবং ভাত খেলে পিপাসা কমে যায়। বিশেষভাবে, কষানো তরকারি না খেয়ে সেদ্ধ তরকারি বা ভেজিটেবল স্যুপ খাওয়া উপকারী।

উপসংহার:

সেহেরিতে সঠিক খাবার খেলে সারাদিন পিপাসা কম অনুভূত হয় এবং শরীরও শক্তিশালী থাকে। হালকা, প্রাকৃতিক এবং পুষ্টিকর খাবারের দিকে মনোযোগ দিলে রোজার পুরো সময়টি সুস্থভাবে পার করা সম্ভব। রোজার সময় পানির ঘাটতি যেন না হয়, সেজন্য প্রতিদিন সেহেরিতে পর্যাপ্ত পানি এবং সঠিক খাবার খাওয়ার গুরুত্ব অপরিসীম।

আপনার সেহেরি যাতে সুস্থ ও শক্তি প্রদানকারী হয়, তার জন্য উপরের খাবারগুলি খেতে পারেন।

Continue Reading

Title

Trending